সৌমিত্র শুভ্র

Role,বিবিসি নিউজ বাংলা, ঢাকা

এক ঘন্টা আগে

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি ক্রমশ জোরালো হয়ে ওঠে। সেই প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সংস্কারে ছয় বিশিষ্ট নাগরিককে দায়িত্ব দেয়ার ঘোষণা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।


অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পার হওয়ার পর বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা।


সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত কমিশনগুলোতে যাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তাদের প্রায় সবাইকেই সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোর নানা ইস্যুতে আগে থেকেই সরব দেখা গেছে।


সংস্কার এবং স্ব-স্ব ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা হয় বিবিসি বাংলার।


যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। ফলে তাদের কর্মপরিধি ও প্রক্রিয়া কী হবে তাও এখনো স্পষ্ট নয়।


তবে, সংস্কারের ব্যাপারে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন তারা।


জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশনের প্রধান হিসেবে যাদের দায়িত্ব দেয়ার কথা বলেছেন তারা হলেন,


নির্বাচন ব্যবস্থা - বদিউল আলম মজুমদার

পুলিশ প্রশাসন - সফর রাজ হোসেন

বিচার বিভাগ - বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান

দুর্নীতি দমন কমিশন- ইফতেখারুজ্জামান

জনপ্রশাসন - আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী

সংবিধান - শাহদীন মালিক

কমিশন প্রধানরা আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে  আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন।

বাংলাদেশের অন্যতম বিতর্কিত বিষয় নির্বাচন ব্যবস্থা। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়েই বিতর্ক ছিল তুঙ্গে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ঘুরেফিরে এসেছে বিভিন্ন অভিযোগ।

নির্বাচনের আয়োজক নির্বাচন কমিশনগুলোর ভূমিকা নিয়েও তাই সমালোচনা আছে।

বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

এবার সেই নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে মি. মজুমদারকে।

সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তেমন সংস্কারের পথ বের করা সম্ভব হবে কি না?

এই প্রশ্নে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "সর্বজন গ্রহণযোগ্য কোনোদিনই সম্ভব নয়। এটা ইউটোপিয়ান (কাল্পনিক)। কিন্তু, সবার মতামতের ভিত্তিতে একটা কনসেনসাস(মতৈক্য) যদি দাঁড় করানো যায়, সেটিই হবে কাঙ্ক্ষিত।"

এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলসহ, ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার মতামত নেবেন বলে জানান তিনি। সবার মতামত নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে রিপোর্ট দেবে কমিশন।

দীর্ঘদিন রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের আওতায় নির্বাচন কমিশন গঠনের পর ২০২২ সালে কমিশন গঠনে একটি আইন করে আওয়ামী লীগ সরকার।

তবে, সেই আইনের সমালোচনা করে, নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সেটি কতটা ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

দেশে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর হয়, সবাই এখন তেমন প্রত্যাশা করছেন বলে মত বদিউল আলম মজুমদারের।

তার মতে, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যবস্থা করা না গেলে কোনো সংস্কারই স্থায়ী হবে না।

"মানুষের সম্মতির শাসন যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় তাহলে যত ক্ষেত্রে যত সংস্কারই করা হোক না কেন, কোনোটাই টেকসই হবে না," যোগ করেন মি. মজুমদার।


Comments